নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর
পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে ডিভোর্স দিতে এবং অভিযোগ তুলে নিতে এবার কলেজ ছাত্রীর মাকে চাপ দিয়েছেন গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার আলোচিত ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম। এছাড়াও ছাত্রীর নিকট আত্মীয়দেরও ক্রমাগত চাপ দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বর্তমানে কলেজছাত্রী ওসির ভয়ে এবং নিরাপত্তাহীনতায় তার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জে অবস্থান করছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ছাত্রী জানায়, পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে গত ১৮ জানুয়ারি রাতে ওসি মিজানুরের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পরদিন থেকেই ওসি জয়দেবপুর থানার কাছে মনিপুর বাজারের ওসির ভাড়া বাসায় আটকে রেখে তাকে ডিভোর্সর জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। পরে উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে তিনি উদ্ধার হন। তারপর থেকেই তিনি বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। গ্রামের বাড়ি এসেও ওসির হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। লোকজন লাগিয়ে ডিভোর্সের জন্য হুমকি ও চাপ দিয়ে চলেছেন। বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন দিয়ে নানা কথা বলছেন। সর্বশেষ তার অসুস্থ্য মাকে বুধবার সকালে ফোন দিয়ে তাকে (ছাত্রী) নিয়ে গাজীপুর যেতে বলেন। পুলিশ সুপারের কাছে করা অভিযোগ তুলে নেওয়া এবং ৫ লাখ টাকা নিয়ে ডিভোর্স দিতে ভয় দেখান।
কলেজ ছাত্রীকে হুমকি এবং ডিভোর্সের জন্য চাপ দেওয়া প্রসঙ্গে ওসির বক্তব্য নিতে তার মোবাইলে ফোন দিলেও ওসি ফোন ধরেননি।
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশীল ঘোষণার আগে মানিকগঞ্জর হরিরামপুর থানা থেকে সদর থানায় বদলী করা হয় ওসি মিজানুরকে। যোগ দিয়ে স্থানীয় এক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য প্রার্থীর সাথে ছবি তুলে নিজ ফেইজবুকে পোষ্ট করেন। সমালোচনার মুখে দায়িত্ব গ্রহণের ২ দিনের মাথায় তাকে গাজীপুরের জয়দেপুর থানায় ওসি হিসেবে বদলী করা হয়। মানিকগঞ্জে থাকা অবস্থায় এক কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন তিনি। দুই মাসে আগে ওই কলেজ ছাত্রীকে মানিকগঞ্জে এক বন্ধুর বাসায় বিয়ে করেন ওসি। বিয়ের পর ছাত্রী জানতে পারেন ওসির স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। গাজীপুরের বদলী হয়ে আসার পর ছাত্রীকে তিনি একটি রিসোর্টে এনে রেখে স্বামী-স্ত্রীর মত বসবাস করেন। এক পর্যায়ে কলেজ ছাত্রীকে মাস্তান দিয়ে জোরপূবর্ক বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন ওসি। পরে পুলিশের সহযোগীতায় রিসোর্টে থেকে উদ্ধার হন ছাত্রী। লিখিত ভাবে গাজীপুরের পুলিশ সুপাররের কাছে ওসির বিচার দাবি করেন। ১৯ জানুয়ারী রাতে ওসি ছাত্রীকে শহরের একটি কাজী অফিসে ১০ লাখ টাকার দেনমোহরে প্রথম স্ত্রীর উপস্থিতিতে ফের বিয়ে করেন। এ ঘটনায় ওসিকে ২০ জানুয়ারী প্রত্যাহার করে পুলিশলাইনে সংযুক্ত করা হয়। বুধবার তার স্থলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত পরিদর্শক মো. ইব্রাহীম খলিলকে ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়।