গ্রেপ্তার রবিন, খোকন এবং ভুক্তভোগী শাহাজাদা (ফাইল ফটো)
গাজীপুর প্রতিবেদক
গাজীপুরে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য ধারণ করে গাড়ি ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় স্বামী-স্ত্রীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কলুন গ্রামের ফাইজুর রহমান ফুলু মিয়ার ছেলে অহিদুর রহমান রবিন (৩২), রবিনের স্ত্রী নূসরাত জাহান ঊষা (২৩) ও রবিনের ভাই নাহিদুর রহমান খোকন (৩৭)।
মামলার বাদী নরসিংদীর সাহেপ্রতাব এলাকার মনসুর আলীর ছেলে ব্যবসায়ী আবু নাইম মো. শাহাজাদা (৪৩)।
পুলিশ জানায়, প্রায় ৮ মাস আগে নূসরাত সাথে নরসিংদীর একটি খাবার হোটেলে বাদীর পরিচয় হয় ব্যবসায়ী শাহাজাদার। এরপর থেকে তাদের মধ্যে মোবাইলে যোগাযোগ থেকে সখ্যতা গড়ে উঠে। রূপ-সৌন্দর্যের ফাঁেদ ফেলে নূসরাত ওই ব্যবসায়ীর সাথে ঘনিষ্ঠ হন। পরে কৌশলে দুইজনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিও গোপনে ধারণ করে রাখেন তিনি।
এক পর্যায়ে স্বামী রবিনের পরিবারের সঙ্গে শাহাজাদার করিয়ে দেয় নূসরাত। পরিচয়ের সূত্রে নূসরাতের কালীগঞ্জের কলুন গ্রামের বাড়িতে প্রায়ই আসা-যাওয়া করতেন শাহাজাদা। নূসরাতও যেতেন শাহাজার বাসায়। পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে সম্প্রতি নূসরাতের স্বামী রবিনকে নিজের ফার্মে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি দেন শাহাজাদা। গত ২৪ জানুয়ারি পরিকল্পিতভাবে শাহজাদার ইয়ামাহা ফেজার ব্রান্ডের একটি মোটরসাইকেল ও নগদ ৫ হাজার টাকা নিয়ে জরুরী কাজের কথা বলে বাড়ি চলে যায় রবিন। দুইদিন পেরিয়ে গেলেও রবিন কাজে যোগ না দিয়ে উল্টো ফোন করে পারিবারিক সমস্যা কথা জানান। ২৬ জানুয়ারি বিকেলে শাহাজাদা নিজ প্রাইভেটকারে নিয়ে রবিনের বাড়িতে যান। অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ওই ছবি দেখিয়ে রাত ৯ টার দিকে রবিন ও তার ভাই খোকন ব্যবসায়ী শাহাজাদাকে ঘরে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। কেড়ে নেয় দুই মোবাইল ফোন। মারধর করে ১৮ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সাদা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়। পিটিয়ে স্বীকারোক্তি মূলক অডিও ও ভিডিও রেকর্ড করে। রাত গভীর হলে খুন করে লাশ গুম করার ভয় দেখায়। ২৭ জানুয়ারি শনিবার ভোর ৪টার দিকে পালিয়ে রক্ষা পান ব্যবসায়ী। ১লা ফেব্রুয়ারি রাতে বাদি হয়ে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অহিদুজ্জামান বলেন, মামলার পর রাতেই তিন আসামীকে গ্রেপ্তার এবং প্রাইভেটকারটি উদ্ধার হয়েছে। আসামি রবিন ও তার ভাই খোকনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড এবং অপর আসামি নূসরাতকে শুক্রবার আদালতে হাজির করা হয়েছে। আদালত আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ধার্য করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।