গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালামের অপসারণ দাবি করেছেন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকরা। শনিবার গাজীপুর কিন্ডারগার্টেন ঐক্য ফোরাম শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান।
সংগঠনের আহবায়ক অনিল চন্দ্র মন্ডলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, শিক্ষক নেতা বেলায়েত হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আলাউদ্দিন, শফিকুল ইসলাম, মো. রফিকুল ইসলাম, বাদল আহমেদ, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক নেতারা বলেন, গাজীপুর সদর উপজেলায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৬২টি। যা প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র ২৫ ভাগ। বাকী ৭৫ ভাগ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে সদর উপজেলার (টঙ্গী বাদে) ৯৬২টি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে। এসব স্কুলে দুই লাখের বেশী শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। সরকার চলতি বছর থেকে প্রতিটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলকে নিবন্ধনের আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মতামতের ভিত্তিতে বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিবন্ধন দেয়ার কথা। কিন্তু সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের ডেকে মোটা টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। টাকা না দিলে পুলিশ দিয়ে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হুমকি দিয়েছেন। তার হুমকিতে শিক্ষকরা আতংকিত। কারণ এর আগে গত ১২ জানুয়ারী সদর উপজেলায় যোগ দিয়েই কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থীদের সরকারের বিনামূল্যের বই দেওয়া হবে না ঘোষণা দেন। তিনি কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকদের ‘দোকানদার’ বলে কটুক্তি ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের তাদের হয়রানী করছেন।
শিক্ষকরা বলেন, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে আব্দুস সালামকে এর আগে রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলায় শাস্তিদমূলক বদলী করা হয়। সেখানেও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে আন্দোলনের মুখে তাকে সুনামগঞ্জের দুর্গম শাল্লা উপজেলায় বদলী করা হয়। সেখানেও দুর্নীতিতে জড়ান তিনি। শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে গত জানুয়ারিতে তাকে ফের গাজীপুরে বদলী করা হয়। এখানে এসেই ঘুষ-দূর্নীতিতে জড়িয়ে শিক্ষকদের হয়রানী করে চলেছেন ওই কর্মকর্তা। ইতিপূর্বে একাধিক তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে তার বেতন ৬ষ্ঠ গ্রেড থেকে নামিয়ে ৯ম গ্রেডে নামিয়ে দেওয়া হয়। গাজীপুরে যোগদানের পর তার বিরুদ্ধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বদলীতে অনিয়মের অভিযোগে একাধিক ভূক্তভোগী শিক্ষক প্রাথমিকের ডিজি ও ডিডি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। তদন্তে অভিযোগ প্রমানীত হলেও তার বিরুদ্ধে গত দুই মাসেও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শুধু কিন্ডারগার্টেন নয়, নিয়ম ও নীতিমালা ভঙ্গ করে বদলীসহ নানা ভাবে সরকারী প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের হয়রানী করছেন। ভয়ে তারা মুখ খুলতে পারছেন না। তারা ওই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার অপসান দাবি করেন। নচেৎ শিঘ্রই তার অপসারণের দাবিতে বৃহৎ কর্মসূচী ঘোষনা দিবেন।