গাজীপুর প্রতিবেদক
গাজীপুরে আমেরিকা-জাপানের যৌথ বিনিয়োগে একটি এআই বেস আইটি পার্ক ও একটি এগ্রো প্রকল্প নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বিপুল কর্মসংস্থান ও রপ্তানী আয়ের উদ্যোগ শুরুতেই হোঁচট খেতে বসেছে।
এর মাধ্যমে একদিকে সরকারের নেওয়া বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দেশে বিনিয়োগে বাঁধা এবং দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করা হচ্ছে। অন্যদিকে দেশে সরকারের এবং বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, প্রকল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা ড. হাসান তাহের ইমাম দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় ব্যবসা করছেন। এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেন নিজ দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির। প্রায় দেড় যুগ আগে গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার পলাশোনা এলাকায় প্রায় দুই’শ বিঘা জমি কিনে আমেরিকা-জাপান যৌথ বিনিয়োগে এআই বেস আইটি পার্ক তৈরির লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ডিজাইনসহ প্রকল্পের বেশকিছু কাজ সম্পন্ন করেন। তাঁর এ কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান প্রতিবেশী চিকিৎসক সামনুন তাহা। তিনি দীর্ঘাদন ধরে একের পর এক সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ‘সরকারী খাল দখল, পরিবেশ ধ্বংস’ ইত্যাদি মিথ্যা অভিযোগ করতে থাকেন। সরকারী তদন্তে প্রতিটি অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণীত হয়েছে।
গত বছর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে সরকারের একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টার নাম ভাঙ্গিয়ে ওই চিকিৎসক প্রকল্প দুইটির বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগেন। একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ করে প্রকল্প দুইটি যাতে গড়ে উঠতে না পারে সেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। প্রকল্প বাঁধাগ্রস্ত করার মাধ্যমে সরকারের বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার সুযোগ তৈরি করে দেশের অর্থনীতি উন্নত এবং দেশকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত করার উদ্যেগকে ব্যাহত করছেন ড. সামনুন তাহা। স্থানীয় কিছু কুচক্রি মহলকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বিশাল বিনিয়োগের বড় একটা সুযোগ বাঁধাগ্রস্থ করে চলেছে।
প্রকল্পের সুপারভাইজার শহিদুল ইসলাম মন্ডল অভিযোগ করেন, প্রকল্পে বাঁধা দিয়ে সরকারের নেওয়া বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দেশের ভিতরে বিনিয়োগের প্রজেক্টে বাঁধা প্রদান করে দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতি এবং সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। শুধু এটা নয় এর মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে এক ধরনের ষড়যন্ত্র এবং বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।
তিনি আরো বলেন, গাছার পলাশোনা এলাকায় আইটি পার্ক করার উদ্দেশ্যে আরো কিছু জমি ক্রয় করার জন্য জমির মালিকদের অগ্রিম টাকা প্রদান করেছেন। এই সব জমি বিক্রেতাদের ডা. সামনুন তাহা এবং স্থানীয় লিটন নামের এক ব্যক্তি নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন। জমি বিক্রিতে বাঁধা দিচ্ছেন।
প্রকল্পটির চিফ এডমেনিস্টিটিভ অফিসার মেজর (অবঃ) মোঃ. জিয়াউল ইসলাম বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে কারো কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। এটি হবে পরিবেশ বান্ধব এবং আন্তর্জাতিক মানের। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিপুল কর্মসংস্থান হবে। কিছু লোক অযথা নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। অবৈধ দখলচেষ্টা, নাশকতা, হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহন এবং প্রকল্পের মালিকানাধীন জমি, সীমানা প্রাচীর ও চলমান উন্নয়নমূলক-কৃষি প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণণের জন্য গাজীপুর মেট্রোপলিট পুলিশ কমিশনারকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডা: সামনুন তাহা তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওখানে আমার পৈত্রিক জমি রয়েছে। আমি কাউকে হয়রানী ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছিনা, বরং অভিযোগকারীরাই আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে’।



