স্টাফ রিপোর্টারস:
গাজীপুরে একটি ভেটেরিনারী ফার্মেসী থেকে ওষধ নিয়ে গরুকে খাওয়ানোর একদনি পর কৃষকের একটি গরু মারা যায়।
মৃত গরুর ক্ষতিপূরন নিয়ে থানায় একটি অভিযোগ করেন গরুর মালিক।
সেই মৃত গরুর ক্ষতিপূরন মালিক না পেলেও তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জামিউল হাসান ওরফে সুমন ওষুধ বিক্রেতাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন ৩২ হাজার টাকা। আরো ১৫ হাজার চয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি থানাধীন আমবাগ পশ্চিমপাড়া এলাকায়।
গেল সোমবার সকালে কোনাবাড়ি আমবাগ পশ্চিমপাড়া এলাকার সেবা ভেটেরিনারী ফার্মেসী মালিক মো. সোলায়মান মিয়া জানান, পুলিশ আপোষ মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে দুই দফায় এক লাখ ৩২ হাজার টাকা নিয়েছেন কিন্তু আপোষ মিমাংসা করে দেয়নি। শুনেছি সেখান থেকে একলাখ টাকা গরুর মালিককে দিয়েছেন।
এলাকাবাসী, গরুর মালিক ও ওষুধ বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরীর জয়েরটেক এলাকার বাসিন্দা ও কৃষক আকছদ আলীর দুইটি গরু হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে যায় এবং মুখ দিয়ে লালা ঝড়তে থাকে।
পরে সে গেল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে পাশ্বর্বতী আমবাগ পশ্চিমপাড়া এলাকার সেবা ভেটেরিনারী ফার্মেসী মালিক মো. সোলায়মানের কাছ থেকে কিছু ওষুধ নিয়ে যান। ওষুধ খাওয়ানোর পরদিন শনিবার সকাল আনুমানিক ১০টার সময় তার একটি গরু মারা যায়।
পরে গরুর মালিক বিষয়টি নিয়ে মার্কেটের মালিক মো. শহিদুল্লাহ তাদের মধ্যে তাৎক্ষণিক আপোষ করে দেন।
এরপর সন্ধ্যার দিকে গরুর মালিক ক্ষতিপূরন দাবী করে কোনাবাড়ি থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে পরদিন রোববার সন্ধ্যায় কোনাবাড়ি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জামিউল হাসান ওরফে সুমন তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরে ওষুধ ব্যবসায়ী সোলায়মান ৩২ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া পান। সোমবার সকালে সে গরুর মালিককে আরো এক লাখ টাকা দেন। কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো আপোষ মিমাংসার করে দেননি ওই এসআই। অপরদিকে সোমবার বিকেলে ওই কৃষকের আরেকটি ছোট গরুর মুত্যু হয়।
সেবা ভেটেরিনারী ফার্মেসীর মালিক মো. সোলায়মান বলেন, আমার দেয়া ওষুধ খেয়ে তার গরু মরেনি বা প্রমানও নেই। তার গরুগুলি আগে থেকেই অনেক অসুস্থ্য ছিলো। আজকেও (সোমবার) তার আরেকটি গরু মারা গেছে। সেটাকে তো আমি আর ওষুধ দেয়নি তাহলে কেনো মারা গেল? তিনি আরো বলেন, আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লাখ ৩২ হাজার টাকা দেওয়ার পরেও এখন মার্কেটের মালিকের ছেলে মো. হোসেন পুলিশের কথা বলে আরো ১৫ হাজার টাকা চাইছেন।
জানতে চাইলে মো. হোসেন বলেন, গরুর মালিকের ছেলে সজিবের কাছে দেয়া হয়েছে এক লাখ। এছাড়া ১৯ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে এসআই সুমনকে। তিনি জানান, পুলিশ চাওয়ার কারণেই আরো ১৫ হাজার টাকা ওষুধ ব্যবসায়ীর কাছে চাওয়া হয়েছে।
কোনাবাড়ি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জামিউল হাসান ওরফে সুমন বলেন, আমি কোনো টাকা পয়সা নেইনি।
কেউ দিয়েছে তার কোনো প্রমান দেখাতে পারবে না। তারা এক লাখ টাকা গরুর মালিককে দিয়েছে।
কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আশরাফ উদ্দিন বলেন, গরু নিয়ে একটা অভিযোগ আছে কিন্তু ওষুধ খেয়ে মারা গেছে তার কোনো প্রমান নেই। তাই এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। গরু নিয়ে টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়টি আমার জানা নেই।
এসআই সুমনের বিরুদ্ধে আমবাগ বোর্ডঘর বিকাশ ব্যবসায়ী ইমাম হোসেনের কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা অন্যায়ভাবে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়ও পুলিশের ওই কর্মকর্তা পুলিশ আইনে গুরতর তথ্য গোপন করে চাকুরিতে যোগদান করেছেন। তা নিয়ে তথ্য সংগ্রহণের জন্য সাংবাদিকরা মাঠে নেমেছে।
Leave a Reply