স্টাফ রিপোর্টার:
একজন পশুর ওষুধ ব্যবসায়ীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ লেনদেনের অভিযোগে এসআই জামিউল হাসান ওরফে সুমনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
গেল মঙ্গলবার রাতেই অভিযুক্ত পুলিশের ওই এসআই সুমনকে গাজীপুরের কোনাবাড়ি থানা থেকে প্রত্যাহার করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) হেডকোয়ার্টারে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জিএমপি’র (অপরাধ) উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু তোরাব সামসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অর্থ লেনদেনের দায়ে এসআই সুমনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গ: গাজীপুরে একটি ভেটেরিনারী (গরু ফার্মেসী) থেকে ওষধ নিয়ে গরুকে খাওয়ানোর একদনি পর কৃষকের গরুটি মারা যায়।
মৃত গরুর ক্ষতিপূরন নিয়ে কোনাবাড়ি থানায় একটি অভিযোগ করেন গরুর মালিক। সেই মৃত গরুর ক্ষতিপূরন মালিক না পেলেও তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জামিউল হাসান ওরফে সুমন ওষুধ বিক্রেতাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন ৩২ হাজার টাকা।
তবে আরো ১৫ হাজার চেয়েছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি থানাধীন আমবাগ পশ্চিমপাড়া এলাকায়।
গেল-সোমবার সকালে কোনাবাড়ি আমবাগ পশ্চিমপাড়া এলাকার সেবা ভেটেরিনারী ফার্মেসী মালিক মো. সোলায়মান মিয়ার কাছ থেকে আপোষ মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে দুই দফায় এক লাখ ৩২ হাজার টাকা নিয়েছেন কিন্তু আপোষ মিমাংসা করে দেয়নি এসআই সুমন।
জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরীর জয়েরটেক এলাকার বাসিন্দা ও কৃষক আকছদ আলীর দুইটি গরু হঠাৎ অসুস্থ্য হয় এবং মুখ দিয়ে লালা ঝড়তে থাকে।
পরে গেল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে পাশ্বর্বতী আমবাগ পশ্চিমপাড়া এলাকার সেবা ভেটেরিনারী ফার্মেসী মালিক মো. সোলায়মানের কাছ থেকে কিছু ওষুধ নিয়ে যান। ওষুধ খাওয়ানোর পরদিন শনিবার সকাল আনুমানিক ১০টার সময় তার একটি গরু মারা যায়।
পরে গরুর মালিক বিষয়টি নিয়ে মার্কেটের মালিক মো. শহিদুল্লাহর কাছে অভিযোগ করলে তাদের মধ্যে তাৎক্ষণিক আপোষ করে দেন।
এরপর সন্ধ্যার দিকে গরুর মালিক ক্ষতিপূরন দাবী করে কোনাবাড়ি থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ করেন।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে পরদিন রোববার সন্ধ্যায় কোনাবাড়ি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জামিউল হাসান ওরফে সুমন তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরে ওষুধ ব্যবসায়ী সোলায়মান ৩২ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া পান।
সোমবার সকালে সে গরুর মালিককে আরো এক লাখ টাকা দেন। কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো আপোষ মিমাংসার করে দেয়নি এসআই সুমন।
অপরদিকে সোমবার বিকেলে ওই কৃষকের আরেকটি ছোট গরুর মুত্যু হয়।
সেবা ভেটেরিনারী ফার্মেসীর মালিক মো. সোলায়মানের দাবী, তার দেয়া ওষুধ খেয়ে গরু মরেনি বা প্রমানও নেই। তবে তার গরুগুলি আগে থেকেই অনেক অসুস্থ্য ছিলো। সোমবার তার আরেকটি গরু মারা গেছে সেটাকে তো আমি আর ওষুধ দেয়নি, তাহলে কেনো মারা গেল?
পশুর ওষুধ ব্যবসায়ীর দাবী তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লাখ ৩২ হাজার টাকা দেওয়ার পরেও মার্কেটের মালিকের ছেলে মো. হোসেনের মাধ্যমে আরো ১৫ হাজার টাকা দাবী করেন ওই দারোগা।
মার্কেট মালিকের ছেলে মো. হোসেন বলেন, গরুর মালিকের ছেলে সজিবকে দেয়া হয়েছে এক লাখ টাকা।
এছাড়া ১৯ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে এসআই সুমনকে। তিনি জানান, পুলিশ চাওয়ার কারণেই আরো ১৫ হাজার টাকা ওষুধ ব্যবসায়ীর কাছে চাওয়া হয়েছে।
কোনাবাড়ি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এসআই সুমনের বিরুদ্ধে অর্থ লেনদেনের অভিযোগের দায়ে তাঁকে গতকাল রাতেই প্রত্যাহার করে জিএমপি’র হেডকোয়ার্টারে সংযুক্ত করা হয়েছে।
Leave a Reply