নিজস্ব প্রতিবেদক:
ছিলেন, গাজীপুরের কোনাবাড়ি কাঁচাবাজার আড়তের আলু, পেঁয়াজ ও পটল বিক্রেতা। এর কিছুদিন পরে নিজেকে সাংবাদিক ও ডিবি পরিচয় দিতে শুরু করলেন।
এরপর আর তাঁকে আলু বিক্রি করতে দেখা যায়নি। তবে মাঝে মধ্যে লোকমুখে শোনা যায়, আলুর ব্যাপারী জুয়েল না কি সাংবাদিক বনে গেছে।
এর কিছুদিন পর থেকে শোনা যায়, পটল ব্যবসায়ী জুয়েল নিজেকে কখনো গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ, কখনো সাংবাদিক, আবার কখনো সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে কোনাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজির মত অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছে।
তবে কথায় আছে চোরের দশ দিন, সাধুর একদিন।
সাংবাদিক ও ডিবি পরিচয়ে বেশি দিন টিকে থাকতে পারেননি। চাঁদাবাজির পাশাপাশি এক নারীকে শ্লীতাহানির অভিযোগও উঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মামলাও হয়েছে।
গেল সোমবার (২৪ জুলাই) রাতে জিএমপি কোনাবাড়ি থানায়, জুয়েল (৫০) সহ তাঁর সহযোগী সোহেল এর নাম উল্লেখ করে আরো অচেনা ৫ জনকে আসামি করে মামলা হয়।
কে এই জুয়েল মিয়া= খুলনা জেলার কয়রা থানার বাগালী গ্রামের মৃত ছকিম উদ্দিন গাজীর ছেলে । তিনি গাজীপুরের কোনাবাড়ি কাঁচাবাজার আড়তে দীর্ঘদিন দরে আলু, পেঁয়াজ ও পটলের ব্যবসা করতেন। তবে তাঁর সহযোগী সোহেল এর ঠিকানা অজানাই রয়ে গেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানায়, মামলার বাদী ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে ভুয়া সাংবাদিক জুয়েল মিয়ার সহযোগী সোহেলের সঙ্গে পূর্বেই পরিচিত ছিল। সে মাঝে মধ্যে ভুক্তভোগীর বাসায় যাওয়া-আসা করতো। সেই সুবাদে গেল রোববার (২৩ জুলাই) সোহেল তাঁর বাসায় গিয়ে দুপুরের খাবার খায়।
এবং রাতেও দুইজন মেহমান নিয়ে খাবে বলে বাসা থেকে চলে যায়। ওইদিন রাত ১০ টার দিকে সোহেল ও তাঁর ওস্তাদ ভুয়া ডিবি জুয়েল এক নারীসহ অচেনা আরো চারজনকে সঙ্গে নিয়ে পূর্ব কথানুযায়ী ভুক্তভোগীর বাসায় প্রবেশ করে।
এসময় জুয়েল নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওই নারীকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাতে থেকে। এবং দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় ওই নারীর শরীরের স্পর্শ কাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীতাহানি করে। এবং তাঁকে ইয়াবা ও নারী ব্যবসায়ী হিসেবে মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর ভয় দেখানো হয়। পরে তাঁর ঘরে থাকা নগদ ৫৫ হাজার টাকা ও অর্ধলক্ষ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার নিয়ে একটি ঘরের কক্ষে আটককে রেখে পালিয়ে যায় জয়েল।
এ সময় তাঁর ডাকচিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন এসে ওই নারীকে উদ্ধার করে কোনাবাড়ি থানায় গিয়ে বিষয়টি জানালে পরে মামলা রুজু হয়।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম আশরাফ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাংবাদিক ও ডিবি পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজির ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply