এম রানা: দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগেই দেশের সব জেলা ও থানা পর্যায়ে কমিটি শেষ করার টার্গেট নিয়ে কাজ করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা।
ইতিমধ্যে দলটির সহযোগী সংগঠনগুলোর জাতীয় সম্মেলন শেষ হয়েছে। এবার মূল দলের পালা। বেশ কয়েক মাস পূর্বে গাজীপুর জেলা ও থানা আ,লীগের কমিটি দেয়া হয়েছে।
তবে গাজীপুর মহানগরীর কয়েকটি থানা আওয়ামী লীগের কমিটি বাকি থাকলেও নগরীর ৫৭টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
থানা আওয়ামী লীগের কমিটির জন্যেও দিনক্ষণও ঠিক হয়েছে। যদি বড় ধরনের কোন ঝুটঝামেলা না হয় তাহলে আগামি অক্টোবর মাসে গাজীপুর মহানগরীর তিন থানার কমিটি ঘোষণা করা হবে। এই তিন থানা হলো, কোনাবাড়ি, কাশিমপুর ও বাসন। এর মধ্যে কাশিমপুর থানা আওয়ামী লীগের কমিটি হবে আগামি ৪ঠা অক্টোবর ও ১৫ই অক্টোবর কোনাবাড়ি এবং ২০ অক্টোবর বাসন।
ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা এসে এ কমিটি ঘোষণা করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল।
এরই মধ্যে কমিটিকে ঘিরে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা কে হবেন সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক। প্রশ্ন বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে, প্রায় দুই যুগ পর এই প্রথমবার মহানগর থানা আওয়ামী লীগের কমিটিতে নেতৃত্ব যাচ্ছে।
তবে এ কমিটিতে জায়গা করে নিতে হলে পরিচ্ছন্ন কর্মীবান্ধব হতে হবে।কমিটিতে যদি দখলবাজ নেতা থাকে তাহলে তাঁদের জায়গা হবে না বলে মহানগর আওয়ামী লীগের একটি বিশেষ সূত্রে জানিয়েছেন।
একটি বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি, কাশিমপুর ও বাসন তিন থানা মিলে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দলীয় পদ চেয়ে সিভি জমা দিয়েছেন। এদের অনেকেরই কপাল পুড়তে পারে।পরিচ্ছন্ন কর্মীবান্ধব এমন ত্যাগীরাই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
কোনাবাড়ি আওয়ামী রাজনীতির রাজপথের হৃৎপিন্ড আওয়ামী লীগের অঙ্গ বলে খ্যাত শীর্ষে থাকা দুই থেকে তিন জনের নাম সর্বত্রই শোনা যাচ্ছে। তবে কে পাবেন গুরুত্বপূর্ণ দলের এই ভাইট্যাল পোস্ট সে বিষয়টি এখনো গোপনই থাকছে।
এ কমিটিকে সামনে রেখে প্রার্থীরা জোর তদবির চালাচ্ছেন।কেউ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, কেউ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি, আবার কেউ গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এড, আজমত উল্লাহ খানেরও কাছেও জোর দতবির চালিয়ে আসছেন।
এ ব্যাপারে পুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এড. আজমত উল্লাহ খান বলেন, মহানগরীর কোনাবাড়ি, কাশিমপুর ও বাসন এই তিন থানার কমিটি আগামি অক্টোবর মাসে অুনষ্ঠিত হবে।
দলীয় সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা এসেই মূলত যাচাই-বাচাই করে গঠনতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী কমিটি ঘোষণা করবেন।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে দলে কোন হাইব্রিড ও বিতর্কিত নেতাদের পদ দেয়া যাবে না । আর দলের অনেক সিনিয়র পুরাতন নেতারা পদ না পাওয়া তাঁদের জন্য বড় একটি বার্তা। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দেরা এই তিন এলাকার বেশ কয়েকজন নেতার আমলনামা চেয়েছেন। তা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং নেতৃবৃন্দের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।
যাচাই-বাচাই করেই তাঁদের পদ ঘোষণা দিবেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা। যাদের নামে কমিটি বাণিজ্য, দখলবাজসহ গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ থাকলে তাঁরা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পদ পজিশনের যোগ্য নয়।
কোনাবাড়ি থানা আওয়ামী লীগের দুইজন সভাপতি প্রার্থী হলেন, শেখ মোঃ আক্কাছ আলী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও এড. আব্দুর রহমান মাস্টার গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য। এই দুইজন হচ্ছে সভাপতি প্রার্থী।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে যারা ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা হলেন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক কাউন্সিলর মোঃ খলিলুর রহমান এম এ, সাবেক কোনাবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক মোঃ সোলাইমান মিয়া, দুই বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ও সাবেক ছাত্র নেতা মোঃ আব্বাসউদ্দিন খোকন, সাবেক কোনাবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক কন্ঠ শিল্পী মোঃ আনোয়ার পারভেজ ও ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আবুল কালাম আজাদ তিনিও থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। এ প্রতিবেদনের সমস্ত তথ্য গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন সূত্রে সংগ্রহ করা ।
Leave a Reply