খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংযোগ দেয়ার সময় এককালনী মোটা অঙ্কের অর্থ দিতে হয় একটি কুচক্রী মহলকে। এরপর প্রতি মাসে চুলা প্রতি এক হাজার করে টাকা দিয়ে চুলা জ্বালাতে হয় অবৈধ গ্রাহকদের। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর অবৈধ গ্যাস সংযোগের মহোৎসব।
অভিযোগ রয়েছে, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড গাজীপুরের কালিয়াকৈরর চন্দ্রা জোনের সংশ্লিষ্ট অসাধু কিছু ব্যক্তি ম্যানেজ হওয়ার পরেই একটি বাটপার মহল অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ লুটেপুটে নিচ্ছে। এতে যেমন রাষ্ট্র হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয়, অপর দিকে দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে।
মাঝে মাঝে লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও বিপুল পরিমাণের অর্থের বিনিময়ে কিছুক্ষণ পরে তা আবারো সংযোগ করে দেয়া হয়।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এশরার নগর হাউজিং সোসাইটিতে প্রায় শতাধিক পঞ্চম থেকে ষষ্ঠতলা ভবনে অবৈধ সংযোগ দেয়া হয়েছে। নগরীর পারিজাত-হরিণাচালা, কোনাবাড়ি হক মেডিকেল রোড মোতালিব মেম্বারপাড়া, কুদ্দুসনগর, বাইমাইল, কোনাবাড়ি কলেজ গেট (দেওয়ালিয়াবাড়ি)সহ আমবাগ মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট (আতাউর মার্কেট) আমবাগ পশ্চিমপাড়া, অবসর প্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক সোহরাফ হোসেন (এসআই মামুন) এর ৬টি বাড়ি, জরুনের বিভিন্ন স্থানে এই চক্রটি হাজার হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে মাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
একটি সূত্রে জানায়, কালিয়াকৈরের চন্দ্রা তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের স্থানীয় কার্যালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে বছরের পর বছর এ অবৈধ গ্যাস সংযোগের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি।
মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও তা কর্তৃক্ষের উদাসীনতা ও অবহেলার কারণেই এ সিন্ডিকেট আবারো সোচ্ছার হয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে সংযোগ দিয়ে থাকে। কোন ভাবেই এ চক্রকে প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। কালিয়াকৈর, কোনাবাড়ি, জরুন ও কাশিমপুর সহ লাখ লাখ অবৈধ সংযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন গ্রাহক জানান, অবৈধ গ্যাস সংযোগকারী কুচক্রটি কোনাবাড়ি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
এশরার নগর হাউজিং সোসাইটি এলাকার অপর এক গ্রাহক জানান, অবৈধ গ্যাস চলালেও বিলের বেলায় কম নেই, প্রতি মাসে এশরারনগর হাউজিং সোসাইটি থেকে ওই চক্রটিকে চুলা প্রতি লাখ লাখ টাকা দিয়ে চুলা জ্বালাতে হয়।
আমবাগ এলাকার এক গ্রাহক বলেন, অবৈধভাবে চালালেও প্রতি মাসে বিল দিতে একটু দেরি হলেই লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আবার নতুন করে সংযোগ দিতে নতুন ভাবে কন্ট্রাক করে দিতে হয় মোটা অঙ্কের অর্থ।
এসব বিল সরকারি ভাবে না দিলেও গোপনে আমবাগ এলাকা থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে যায় একজন গ্যাসের ঠিকাদার।
এ ব্যাপারে চন্দ্রা জোনের প্রকৌশলী মোস্তফা মাহবুব এর সরকারি মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে গাজীপুর তিতাসের (ডিজিএম) প্রকৌশলী শাহ্জাদা ফরাজী বলেন, আপনার কাছে কোন নোট বা তথ্য থাকলে আমাকে অথবা ম্যানেজারকে জানান আমরা ব্যবস্থা নেব। প্রতি মাসেই আমাদের অভিযান চলছে।
Leave a Reply