নিহত বিকাশ সরকার, তার স্ত্রী স্বর্ণা রানী সরকার ও মেয়ে পারমিতা সরকার তুষি
সিরাজগঞ্জ প্রতিবেদক
সিরাজগঞ্জ উপজেলার তাড়াশে মঙ্গলবার তালাবদ্ধ ঘরে বাবা-মা ও মেয়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন হয়নি। ঘটনায় শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে পুরো তাড়াশ এলাকা। ভদ্র ও সাধারণ জীবন যাপন করা ধনী এই পরিবারের হত্যাকান্ড নিয়ে দেখা দিয়েছে নানান জল্পনা-কল্পনা। চাঞ্চল্যকর এই ট্রিপল মার্ডারের বিষয়ে কয়েকটি ক্লু নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। কিন্তু এখনো উদঘাটিত হয়নি কে বা কারা কোন তাদের হত্যা করল।
এ ঘটনায় নিহত বিকাশের স্ত্রীর বড় ভাই বাদী হয়ে তাড়াশ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
জানা গেছে, বিকাশ সরকার ছিলেন উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কোষাধ্যক্ষ। এলাকায় ভদ্র ও শান্ত হিসেবে এলাকায় পরিচিত তার পরিবার।
সিরাজগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার গোস্বামী বলেন, ‘২৯ জানুয়ারি সোমবার রাত মধ্যে রাতে বিকাশের ভগ্নিপতি চন্ডী দাস তাকে করে বলেন, ‘‘দুদিন হলো ওদের ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। কোথায় আছে কেউ কিছু বলতেও পারছে না’’। পরে তিনি তাড়াশ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আনন্দ ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে বিকাশের বাড়িতে যাই’।
তিনি আরও বলেন, ‘ রাত দেড়টার বাড়ির তিনতলার বিকাশের ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখি বাইরে থেকে দরজায় তালা লাগানো। তার মোবাইলে কল দিলে ভেতরে রিং বাজতে শুনি। তখন বিষয়টি থানায় জানাই। পরে পুলিশ এসে দরজার তালা ভাঙতেই দেখি ভেতরে তিন জনের লাশ পড়ে আছে। প্রথম রুমেই পড়ে ছিল বিকাশের গলাকাটা লাশ। পাশের রুমের মেঝেতে ছিল বিকাশের এবং বিছানায় মেয়ের গলাকাটা লাশ।
তিনি বলেন, ‘২৭ জানুয়ারি শনিবার বিকালে বিকাশসহ আমরা সবাই উপজেলার দেশিগ্রামে গিয়েছিলাম শিব মন্দিরের কমিটি গঠন নিয়ে মিটিংয়ে বসি। হঠাৎ বিকাশ বললো, তার কাছে কিছু লোকজন আসছে, দ্রুত বাড়িতে যেতে হবে। ৫টার দিকে চলে আসেন তিনি। এরপর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি, মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।’
ভগ্নিপতি চন্ডী দাস বলেন, ‘ব্যবসায়ী বিকাশ (৪৮) ধনী হলেও সাধারণ জীবন যাপন করতেন। এলাকায় তার ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিল। তার স্ত্রী স্বর্ণী সরকার(৪৫) ছিলেন গ্রহিনী এবং মেয়ে পারমিতা সরকার তুষি (১৫) দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তিনি অনেক ধনসম্পদের মালিক ছিলেন। কিন্তু এগুলো ভোগ করার কেউ রইল না। ঘাতকরা পুরো পরিবারকে মেরে ফেললো।’
উল্লাপাড়া সার্কেলের (উল্লাপাড়া-তাড়াশ) সহকারী পুলিশ সুপার অমৃত কুমার সূত্রধর বলেন, ‘শনিবার রাতেই তাদের হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। বিকাশের শরীরে যে পোশাক ছিল তাতে মনে হচ্ছে তিনি বাইরে থেকে বাসায় এসেছিল। এ ঘটনায় নিহত বিকাশের স্ত্রীর ভাই সুকমল সরকার বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। বেশ কিছু ক্লু নিয়ে কাজ চলছে। শিঘ্রই রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে।’