গাজীপুরে ময়লাবাহী পিকআপ চাপায় নারী শ্রমিকের মৃত্যু মহাসড়ক অবরোধ গাড়ি ভাংচুর অগ্নিসংযোগ
গাজীপুর প্রতিবেদক
গাজীপুরে রাস্তা পার হতে গিয়ে সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী পিকআপ চাপায় এক নারী গার্মেন্টস কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর উত্তেজিত শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে এবং পিকআপটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া তারা অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাংচুর এবং মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। শনিবার সকালে মহানগরীর কুনিয়া তারগাছ এলাকায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
অবরোধের কারণে এ সময় সাড়ে ৩ ঘন্টা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। প্রায় ১১ কিলোমিটার এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।
নিহত মুনিরা বেগম (৩০) ওই এলাকার টেড বার্নহার্ডজ টেক্সটাইলের সুইয়িং অপারেটর ছিলেন। তিনি শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ থানার ভুয়াকান্দি চরভাঙা গ্রামের রুহুল আমিন সরদারের স্ত্রী। পরিবারের সাথে তিনি তারগাছ এলাকার মো. হাসেমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মুনিরা বেগম সকাল পৌনে ৮টার দিকে অন্য শ্রমিকদের সাথে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন। এ সময় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহি একটি পিকআপ তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পিকআপটি দ্রæত গতিতে পালাতে গিয়ে অন্য এক ভ্যানচালককে ধাক্কা দিলে তিনিও আহত হন। পরে পিকআপ ফেলে পালিয়ে যাওয়ার সময় অন্য শ্রমিকরা চালক সোলায়মানকে আটক করে গণধোলাই এবং পিকআপটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
দুর্ঘটনায় শ্রমিক মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আশেপাশের কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলনে যোগ না দেওয়ায় আশেপাশের অন্তত ১৫টি কারখানায় তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ, দরজা-জানালা ব্যাপক ভাংচুর করে। উত্তেজিত শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। ভাংচুর করে ৫০-৬০টি যানবাহন। অবরোধ-ভাংচুর ছড়িয়ে পড়ে গাজীপুরা বাসস্ট্যান্ড থেকে এরশাদ নগর বোর্ডবাজার পর্যন্ত। এতে বন্ধ হয়ে পড়ে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল। অবরোধের কারণে ভোগড়া বাইপাস চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী বাজার পর্যন্ত সড়কে হাজার হাজার যানবাহন আটকা পড়ে যাত্রীরা সীমাহীন দুভোর্গে পড়েন। খবর পেয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ জলকামান ও রায়ট কার নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, শ্রমিকরা ২৫-৩০টি যানবাহন এবং ১০-১২টি কারখানা ভাংচুর করে। অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করলে শ্রমিকরা উল্টো পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে ধাওয়া দিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। নিহতের স্বামীর আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ বিনা ময়নাতদন্তে হস্তান্তর করা হয়েছে।